দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি
‘‘মানুষ মানুষের জন্য-জীবন জীবনের জন্য’’ করোনা মহামারীতে মানুষের খাদ্য সংকটের কথা মাথায় রেখে দুর্গাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের এক রিক্সাচালক মো. তারা মিয়া ১০হাজার ২শত টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে জমা দিয়ে মানবিকতার এক বিরল দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন। শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় সংসদ মানু মজুমদার এর মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম এর কাছে প্রদান করা হয়।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম জানান, তারা মিয়া দুর্গাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেবথৈল গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে একটি নতুন রিক্সা কেনার জন্য টাকা জমানো শুরু করেন। ইতোমধ্যে দেশে করোনা পরিস্থিতিতে রিক্সা না কিনে তিনি সমুদয় টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেয়ার জন্য এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে আমার কাছে জমা দেন। এই ঘটনাটি মানবতার এক বিরল দৃষ্টান্ত। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলী সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদ, সহ:সভাপতি মো: আলী আজগর, পৌর মেয়র মাও: আব্দুস সালাম, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নাসির উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাদ্দাম আকঞ্জি, যুবলীগ সভাপতি আব্দুল হান্নান, সহ:সভাপতি সুমন চৌধুরী পাভেল সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মো. তারা মিয়া বলেন, দির্ঘদিন ভাড়ায় চালিত রিক্সা চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করছি। নতুন একটি রিক্সা কিনার জন্য এই টাকা জমিয়ে ছিলাম। কিন্তু করোনায় দেশের মানুষ না খেয়ে কষ্ট করছে। আমার জন্য নতুন রিক্সা কিনার চেয়ে মানুষের জীবন বাঁচানো বড়, বেঁচে থাকলে নতুন রিক্সা কিনতে পারবো। অভুক্ত মানুষের সহায়তা করতে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে আমার জমানো ১০হাজার ২শত টাকা প্রদান করলাম। আমার অনুরোধ, আসুন দেশের স্বার্থে সরকারী নির্দেশনা মেনে, সকলেই নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করি।
রিক্সাচালক তারা মিয়া, দুর্গাপুর উপজেলায় ২২ বছর যাবত রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রায় ৪ বছর যাবত ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি মাদ্রাসার হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে খাতা, কলম, পেন্সিল, পেন্সিল বক্স, টিফিন বক্স, ফুটবল ও স্কুল ড্রেস সহ শিক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস বিনামুল্যে প্রদান করে থাকেন। ১ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক তারা মিয়া বলেন, শহরে সারাদিন রিক্সা চালিয়ে উপার্জিত অর্থ থেকে সংসার খরচ বাদে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে ১০,২০০ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়েছে।